September 7, 2024, 11:52 pm

কুমিল্লায় কাঠমিস্ত্রি ও কারিগররা এখন নৌকা তৈরিতে ব্যস্ত

কুমিল্লা প্রতিনিধি: কুমিল্লা জেলার নদ-নদীতে বর্ষার পানি বাড়ার ফলে নদী ও বিল এলাকার মানুষ পারাপারের জন্য নতুন নৌকা তৈরি ও পুরোনোগুলো মেরামতের কাজে ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন কাঠমিস্ত্রি ও কারিগররা।
জেলার নদীর তীরবর্তী বড়ই কৃষ্ণপুর, পিপুয়া, শুহিলপুর, রাগদৈল ও রাণীপুর অধিকাংশ এলাকাই নৌকা তৈরির ধুম পড়েছে। কালাডুমুর নদীতে পানি বাড়ার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে নৌকা তৈরি কাজ।
চান্দিনা উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, কাঠমিস্ত্রিরা কেউ বাড়ির আঙিনায় বা পাড়ার খালি জায়গায়, কেউ-কেউ হাটের পাশে নৌকা তৈরি করছেন। বর্ষা মৌসুমকে সামনে রেখে নৌকা তৈরির কাঠমিস্ত্রি ব্যস্ত সময় পার করছেন। দিন-রাত কাঠ চিরানো, তক্তা ও গুড়া বানানো, কাঠ মসৃণ করা, তক্তা জোড়া লাগানোর কাজে ব্যস্ত সময় পার করছেন কাঠমিস্ত্রিরা। এসব কাজে সহযোগিতা করছেন পরিবারের লোকজন।
কাঠমিস্ত্রি নিমাই সূত্রধর ও সুনীল সূত্রধর বাসসকে বলেন, এখন প্রায় প্রত্যেক এলাকায় যোগাযোগের জন্য রাস্তা করা হয়েছে। ফলে দূরের যাত্রার জন্য কেউ বড় নৌকা তৈরি করে না। বর্ষায় এ পাড়া থেকে ও পাড়া যাতায়াতের জন্য ছোট ছোট নৌকার প্রয়োজন হয়। তাই বড় নৌকা তৈরি হয় না। ছোট নৌকার কদর বেশি। তারা জানান, বর্ষা মৌসুমে কাঠ মিস্ত্রির কাজ করেই তাদের সংসার চলে। ছোট থেকেই বাপ-দাদার কাছে হাতেখড়ি নিয়েছেন তারা। কাঠ মিস্ত্রির কাজ তাদের নেশা ও পেশা। একটি নৌকা তৈরিতে তিনজনের ২-৩ দিন সময় লাগে।
পিপুয়া গ্রামের হরিপদ চন্দ্র সূত্রধর বাসসকে বলেন, আমি কাঠের বিভিন্ন আসবাবপত্র তৈরির পাশাপাশি নতুন নৌকা তৈরি ও পুরাতন নৌকা মেরামতের কাজ করছি। আমার সঙ্গে আরও দুইজন কাজ করছেন। তারাও ব্যস্ত সময় পার করছেন। তিনি বলেন, দীর্ঘ ২৫ বছরের বেশি সময় ধরে আমি কাঠ মিস্ত্রির কাজ করছি। ছোটবেলায় হাতুড়ি ও বাটালের সঙ্গে বন্ধুত্ব গড়ে উঠেছে। তাই বাপ-দাদার সঙ্গে কাঠ মিস্ত্রির কাজ শিখেছি। দাদার সঙ্গে চান্দিনা উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় গিয়ে কাজ করেছি। এখন বর্ষার সময় নৌকা তৈরি করছি।
সুনীল চন্দ্র সূত্রধর নামে এক মিস্ত্রি বাসসকে জানান, বর্ষা মৌসুমে নৌকার কদর বেড়ে যায়। তাই বর্ষার সময় নৌকা তৈরিতে ব্যস্ত হয়ে পড়েন। বাপ-দাদারা শিখিয়ে যাওয়া কাজ এখন আমাদের নেশা ও পেশা হয়ে গেছে। একটি ছোট নৌকা তৈরি করতে ২-৩ দিন সময় ও ৮ থেকে ১৮ হাজার টাকা খরচ হয়।
চান্দিনা উপজেলার শুহিলপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আবু বক্কর সিদ্দিকী বাসসক বলেন, প্রতি বছরই কালাডুমুর নদীর তীরবর্তী এলাকাগুলো বন্যাকবলিত হয়ে পড়ে। এ সময় বাড়ি ঘরের পানি উঠায় এলাকাবাসী ভোগান্তীতে পড়ে। এই সব নৌকা দিয়ে স্থানীয় এলাকায় কোনো রকম চলাচল করা যায়। কিন্তু দূর দূরান্তে যেতে হলে ব্যক্তিগত নৌকায় ভাড়া দিয়ে চলাচলা করতে হয় স্থানীয়দের।

নিউজটি শেয়ার করুন

© All rights reserved © jamunanewsbd.com
Design, Developed & Hosted BY ALL IT BD