October 18, 2024, 2:38 am

৩৩ লাখ টাকায় বিক্রি হলো বিশ্বের সবচেয়ে দামি পালক

যমুনা নিউজ বিডি: বর্তমানে বিলুপ্ত নিউজিল্যান্ডের হুইয়া পাখির একটি পালক নিলামে ২৮ হাজার ৪১৭ মার্কিন ডলারে বিক্রি হয়েছে। বাংলাদেশি মুদ্রায় যার মূল্য ৩৩ লাখ ৩০ হাজার ৮১৬ টাকা! গত সোমবার পালকটি নিলামে বিক্রি হয়। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হয়েছিল পালকটির দাম ৩ হাজার মার্কিন ডলার পর্যন্ত উঠতে পারে। কিন্তু এই দামে বিক্রি হওয়ার পর তা আগের রেকর্ডটি ভেঙে দিয়েছে বলে নিলামকারী প্রতিষ্ঠান ‘ওয়েব’স জানিয়েছে। খবর বিবিসির।

মাওরি জাতি হলো নিউজিল্যান্ড ভূখণ্ডের আদিবাসী এবং একটি পলিনেশীয় জাতি। মাওরিদের পূর্বপুরুষেরা পূর্ব পলিনেশিয়ায় বসতি স্থাপনকারীদের থেকে উদ্ভূত হয়েছিল, যারা প্রায় ১৩২০ থেকে ১৩৫০ সালের মধ্যে বিভিন্ন যাত্রায় নিউজিল্যান্ডে আসেন। হুইয়া পাখি মাওরিদের কাছে একটি পবিত্র পাখি। এই পাখিদের পালক প্রায়ই তাদের প্রধান এবং তাঁর পরিবারের সদস্যরা মাথায় পরিধান করতেন। এই পাখির পালক উপহার হিসেবে বা ব্যবসা জন্যও ব্যবহার করা হতো।

নিউজিল্যান্ডের জাদুঘর অনুসারে, হুইয়া পাখি সর্বশেষ নিশ্চিতভাবে দেখা গিয়েছিল ১৯০৭ সালে। কিন্তু তার পরের বিশ থেকে ত্রিশ বছর ধরেও অসমর্থিত সূত্রে এই পাখি দেখার খবর পাওয়া গেছে। তবে মনে করা হয়, ১৯২০–এর দশক পর্যন্ত হয়তো হুইয়া পাখি জীবিত ছিল।

হুইয়া ছিল নিউজিল্যান্ডের ‘ওয়াটলবার্ড’ গোত্রের একটি ছোট গানের পাখি। এই পাখি লাফানোর ক্ষমতা এবং সুন্দর পালকের জন্য খুব সুপরিচিত ছিল। সোমবার বিক্রি হওয়া পালকটি খুবই অক্ষত অবস্থায় ছিল বলে নিলামকারী প্রতিষ্ঠান ওয়েব’স-এর ডেকোরেটিভ আর্টসের প্রধান লেয়া মরিস বলেছেন।

তিনি বিবিসিকে বলেন, ‘এখনও পালকটি খুব স্বতন্ত্র চকচকে অবস্থায় আছে এবং কোনো পোকামাকড় এর ক্ষতি করেনি। ’ তিনি আরো বলেন, ‘নিলামকারী প্রতিষ্ঠান পালকটি ইউভি প্রতিরক্ষামূলক কাচের বক্সের ভিতর আর্কাইভাল কাগজ দিয়ে জড়িয়ে রেখেছিল। যার অর্থ সত্যি এটি সারাজীবন অক্ষত থাকবে।

কিন্তু পালকটি যে কেউ চাইলেই কিনতে পারবেন না। নিউজিল্যান্ডের সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য বিষয়ক মন্ত্রণালয় পালকটিকে একটি ‘তাওঙ্গা তুতুরু’ হিসেবে নিবন্ধিত করছে, যার মানে হলো এটি খাঁটি সম্পদ। শুধুমাত্র নিবন্ধিত সংগ্রাহক এই পালক কেনার অনুমতি পাবে এবং সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য মন্ত্রণালয়ের অনুমতি ছাড়া তারা এই পালক দেশের বাইরে নিতে পারবেন না।

মরিসের মতে, পালক নিয়ে নিউজিল্যান্ডবাসীর অতি আগ্রহ এবং উৎসাহও এর দাম বাড়িয়ে দিয়েছে। তিনি বলেন, ‘আমরা রেকর্ড সংখ্যক মানুষের কাছ থেকে আবেদন পেয়েছি, যারা পালকটি সংগ্রহ করার জন্য নিবন্ধিত সংগ্রাহক হতে চেয়েছে। ’ তিনি বলেন, ‘আমরা (নিউজিল্যান্ডবাসী) আমাদের ভূমি, পরিবেশ, উদ্ভিদ ও প্রাণীজগতের প্রতি খুব যত্নশীল। তিনি আরো বলেন, ‘আমি মনে করি যেহেতু এই পাখিটি এখন বিলুপ্ত হয়ে গেছে, আমরা নিউজিল্যান্ডের অন্যান্য পাখির দিকে তাকাব এবং বলব, আমরা চাই না যে এটি আর কখনও ঘটুক। ’

অতীতে হুইয়া পালক মাওরিদের কাছে একটি মর্যাদাকর চিহ্ন ছিল। ইউরোপীয়দের আগমনের আগে থেকেই এটি একটি বিরল পাখি। নিউজিল্যান্ডের যাদুঘর অনুসারে, নিউজিল্যান্ডে যারা এসেছিলেন তাদের মধ্যে এই পাখির পালক জনপ্রিয়তা অর্জন করে। এর পরেই প্রজাতিটি সংগ্রাহক এবং ফ্যাশন ব্যবসায়ীদের লক্ষ্যে পরিণত হয়েছিল এবং বিলুপ্তির দিকে ঠেলে দিয়েছিল।

নিউজটি শেয়ার করুন

© All rights reserved © jamunanewsbd.com
Design, Developed & Hosted BY ALL IT BD